২য় বিশ্বযুদ্ধে আইনস্টাইন আর্শীবাদ ছিলেন, নাকি অভিশাপ?
১৯৪৫ সালের ৬ ও ৯ আগষ্ট জাপানের দুটি শহরে দুটি পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করার কয়েক মাস পর টাইম ম্যাগাজিনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এতে বলা হয়, আলবার্ট আইনস্টাইন অ্যাটম বোমা নিয়ে সরাসরি কোনো কাজ করেননি, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিবেচনায় তিনিই এই বোমাটির জনক:
প্রথমত, তাঁর উদ্যোগের ফলেই যুক্তরাষ্ট্র গোপনে বোমা বানানোর গবেষণা শুরু করে।
দ্বিতীয়ত, তাঁর তত্ত্বই (E=mc2) এ বোমার আত্মপ্রকাশকে তাত্ত্বিকভাবে সম্ভব করে তোলে।
অনুমান করা হয় যে ১৯৪৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বোমা বিস্ফোরণের ফলে হিরোশিমাতে প্রায় ১৪০,০০০ লোক মারা যান। নাগাসাকিতে প্রায় ৭৪,০০০ লোক মারা যান। জাপানের করা এক হিসাব অনুযায়ী বোমার প্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগসমূহের ওপর হাসপাতাল থেকে পাওয়া তথ্য গণনায় ধরে হিরোশিমায় ২৩৭,০০০ এবং নাগাসাকিতে ১৩৫,০০০ লোকের মৃত্যু ঘটে। দুই শহরেই মৃত্যুবরণকারীদের প্রায় সবাই ছিলেন বেসামরিক ব্যক্তিবর্গ।
জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করা আইনস্টাইন ইহুদীদের পক্ষে ছিলেন। তিনি ২য় বিশ্বযুদ্ধে নিজ দেশ জার্মানীর বিরোধীতা করে আমেরিকার হয়ে কাজ করেন।
২০০৫ সালে জার্মান ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা DW একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যেখানে লিখা ছিল,
Albert Einstein was a pacifist who believed in the just war.
সেখানে Nobuko Shinohara নামের এক বিধবা নারীর কথা উল্লেখ করা হয়। যার স্বামী ছিলেন একজন দার্শনিক ও জার্মান-জাপানিজ অনুবাদ। যার কাছে আইনস্টাইনের গোপন কিছু চিঠিপত্র সংরক্ষিত ছিল।
তার কিছু অংশ তুলে ধরলাম,
I didn't write that I was an absolute pacifist but that I have always been a convinced pacifist. That means there are circumstances in which in my opinion it is necessary to use force.
তো যাই হোক, আনবিক বোমা নিয়ে আইনস্টাইন সম্পর্কে নানা মুনি নানা মত দিয়েছেন। ছোট বেলায় ইংরেজী প্যারাগ্রাফ "Use of Science" মুখস্থ করার সময় একটি লাইনের কথা খুন মনে পড়ছে।
"The fate of an invention depends on it's user"
১৯৪৫ সালে জাপানে আনবিক বোমা বিস্ফোরণের নির্দেশ দেন আমেরিকার ৩৩ তম প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান। আইনস্টাইন এর সূত্রকে কাজে লাগিয়ে তিনি বিশ্বকে জানান দেন যে তিনিই হলেন পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর প্রেসিডেন্ট।
পরিশেষে একটি কথাই বলব। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের E=mc2 তত্ত্বকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ব আজ অনেকদূর এগিয়ে গেছে। এগিয়ে গেছে আধুনিক সমরাস্ত্র ও আণবিক শক্তিধর দেশের হুমকি ধামকি।
তাই তার এই তত্ত্ব কারো কাছে "আশীর্বাদ" আবার কারো কাছে হয়েছে সেটা "অভিশাপ"।
-ডা. মির্জা শামীম
(বিদ্রঃ ইহা একান্তই আমার নিজেস্ব মতামত। পাঠকের চিন্তা ধারার সাথে এর অনেক অমিল থাকতে পারে। তবে কোন ভুল হলে তা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইল)

No comments